উপসর্গ কাকে বলে? কত প্রকার ও কী কী?




উপসর্গ; উপসর্গ কাকে বলে? কত প্রকার ও কী কী? উপসর্গের অর্থবাচকতা নেই

অর্থদ্যোতকতা আছে। 


কতগুলো বর্ণ বা বর্ণ সমষ্টি ধাতু বা শব্দের পূর্বে বসে নতুন শব্দ গঠন করে ও অর্থের পরিবর্তন সাধন করে, এইরূপ বর্ণ বা বর্ণ সমষ্টিকে উপসর্গ বলে। উপসর্গ নতুন নতুন শব্দ তৈরি করে এবং উপসর্গগুলোকে শ্রেণির অব্যয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

 উপসর্গের অর্থবাচকতা নেই; কিন্তু অর্থদ্যোতকতা আছে: 

বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত উপসর্গগুলোর নিজস্ব কোনো অর্থ নেই, কিন্তু শব্দ সৃষ্টি করে শব্দের বৈচিত্র্য বা পরিবর্তন আনয়ন করে। যেমন—'প্র' একটি উৎসর্গ। এর কোনো নিজস্ব অর্থ না থাকলেও 'গতি' শব্দের পূর্বে বসে (প্র + গতি) 'প্রগতি' নামে একটি নতুন শব্দ সৃষ্টি করেছে। একই রকম ‘হৃ ধাতু থেকে উৎপত্তি 'হার' কুদস্ত পদের পূর্বে প্র, আ, বি ইত্যাদি উপসর্গ যুক্ত হয়ে অর্থের পরিবর্তন সাধন করে। যেমন—প্র + হার = প্রহার (মারা), আ + হার আহার (খাওয়া) বি+হার বিহার(ভ্রমণ) । সুতরাং বলা যায় যে, উপসর্গের নিজস্ব কোনো অর্থবাচকতা না থাকলেও অন্য শব্দের পূর্বে বলে সেই শব্দের অর্থদ্যোতকতা বা নতুন অর্থ সৃষ্টির ক্ষমতা আছে।


বাংলা ভাষার ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি দেখুন

উপসর্গের কাজ ও প্রয়োজনীয়তা :

বাংলা শব্দ গঠনে উপসর্গের কাজ বা প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। উপসর্গের প্রয়োজনীয়তাকে সাজিয়ে বলতে গেলে এভাবে বলতে হয় :

(ক) উপসর্গ নতুন অর্থবোধক শব্দ তৈরি করে। যেমন—ভাত থেকে প্রভাত।

(খ) শব্দের অর্থের পূর্ণতা দান করে। যেমন—ভ্রমণ থেকে পরিভ্রমণ।

(গ) উপসর্গ শব্দের অর্থের সম্প্রসারণ ঘটায়। যেমন—তাপ থেকে পরিতাপ।

(ঘ) শব্দের অর্থের সংকোচন ঘটায়। যেমন—পূর্ণ থেকে পরিপূর্ণ।

(3) অর্থের পরিবর্তন ঘটায়। যেমন–অর্থ থেকে কুঅর্থ

 

উপসর্গের প্রকারভেদ

বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত উপসর্গগুলোকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। 

যথা-(১) সংস্কৃত উপসর্গ (২) বাংলা উপসর্গ ।৩) বিদেশী উপসর্গ।

(১) সংস্কৃত উপসর্গ:  সংস্কৃত উপসর্গ মোট বিশটি। যেমন—প্র, পরা, অপ, সম, নি, অব, অনু,

নির, দুর, বি, অধি, সু, উৎ, পরি, প্রতি, অভি, অতি, অপ, উপ, আ

(২) বাংলা বা দেশী উপসর্গ:  বাংলা উপসর্গগুলো স্বতন্ত্রভাবে বাক্যে ব্যবহৃত হয় না। সংস্কৃত উপসর্গের মতো ধাতুর পূর্বেও যুক্ত হয় না। বাংলা উপসর্গগুলো অর্থযুক্ত নাম শব্দের পূর্বে যুক্ত হয়। উপসর্গগুলো হলো : অ, আ, অনা, অঘা, আন, অঞ্জ, আব, আড়, উন, কু, নি, পাঙি, বি, ভর, স, সা, সু, রাম, ইতি, কদ, হা ইত্যাদি।

(৩) বিদেশী উপসর্গ:  বাংলা ভাষায় আরবি, ফারসি, ও ইংরেজি শব্দের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। উপসর্গের ক্ষেত্রেও এর নিদর্শন দেখা যায়। বিদেশী উপসর্গগুলো বিভিন্ন শ্রেণীর শব্দের পূর্বে বসে।

যেমন— 

(ক) ফারসি: দর, কার, নিম, না, ফি, বদ, বে, বর, ব, কম ইত্যাদি।

(খ) আরবি : আম, খাস, লা, বাজে, গর ইত্যাদি।

(গ) ইংরেজি: ফুল, হাফ, হেড, সাব ইত্যাদি।

সমাসের প্রয়োজনীয়তা দেখতে ক্লিক করুন

 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন