আহ্বান গল্পের বিষয়বস্তু; আহ্বান-বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, আহ্বান গল্পের উপজীব্য বিষয়;
শিক্ষা ও কর্মজীবন: তিনি বনগ্রাম স্কুল থেকে ১৯১৪ সালে প্রথম বিভাগে মেট্রিক পাস করেন। রিপন কলেজ থেকে ১৯১৬ তে আইএ এবং ১৯১৮ তে ডিস্টিংশনে বিএ পাশ করেন। কর্মজীবনে তিনি হুগলি কলকাতা স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন।
উপন্যাস: পথের পাঁচালি (১৯২৯), অপরাজিত (১ম ও ২য় খণ্ড, ১৯৩২), দৃষ্টিপ্রদীপ (১৯৩৫), আরণ্যক (১৯৩৯), আদর্শ হিন্দু হোটেল (১৯৪০), বিপিনের সংসার (১৯৪১), দুই বাড়ি (১৯৪১), অনুবর্তন (১৯৪২), দেবযান (১৯৪৪), কেদার রাজা (১৯৪৫), অথৈজল (১৯৪৭), ইছামতি (১৯৫০), অশনি সংকেত (অসমাপ্ত, বঙ্গাব্দ ১৩৬৬), দম্পতি (১৯৫২)
ভ্রমণকাহিনী ও দিনলিপি: অভিযাত্রিক (১৯৪০), স্মৃতির রেখা (১৯৪১), তৃণাঙ্কুর (১৯৪৩), ঊর্মিমুখর (১৯৪৪), বনে পাহাড়ে (১৯৪৫), উৎকর্ণ (১৯৪৬), হে অরণ্য কথা কও (১৯৪৮)
অপরিচিতা গল্পের বিষয়বস্তু এখানে
গল্পের বিষয়বস্তু:
'আহ্বান' গল্পের নায়ক কলকাতার যুবক অনেক বাদে দেশের বাড়িতে গেছে।
আমবাগানের পথে তার সঙ্গে প্রথম দেখা “ভারতচন্দ্র-বর্ণিত জরতীবেশিনী অন্নপূর্ণার
মতো” এক বুড়ীর। সেই থেকে ছুটিছাটায় বাড়ি গেলেই বুড়ী আসে দেখা করতে। জমির
করাতীর বৌ এই বুড়ী। সংসারে কেউ নেই, এক নাতজামাই আছে, সে বুড়িকে ভাত দেয় না।
বুড়ীর বড় কষ্ট, ভাত জোটে না সবদিন। বুড়ী যখনি আসে দন্তহীন মুখে হেসে বলে- অ
গোপাল আমার'। নায়কের জীবনে একটা ঘনিষ্ঠ আদরের সম্বোধন করার লোক আর এখন নেই। যখনি
আসে হাতে একটা-কিছু নিয়ে আসে' তার গোপালের জন্যে। কোনো নিষেধ মানে না, বারবার এসে
ডাক দেয়- 'অ মোর গোপাল।' একবার নায়ক বাড়ী এসে শোনে বুড়ীর খুব অসুখ, তাকে দেখতে
চায়, যে বুড়ীকে দেখে আসে, বুড়ী খুব খুশি। ‘আমি মরে গেলে তুই কাফনের কাপড় কিনে
দিস বাবা', বুড়ী একদিন বলে। বছরখানেক বাদে নায়ক গ্রামে গেছে, বুড়ী পূর্ব রাতে
মারা গেছে। আবদুল, শুকুর মিঞ্চা, নসর-এরা সবাই বলে-'বুড়ী তোমার নাম করতো। তোমায়
বড্ড ভালবাসত। তোমার কাছে কাফনের কাপড় নিয়ে তবে ওর মহাপ্রাণীড়া ঠাণ্ডা হলো।'
সবাই এক এক কোদাল মাটি দিলে কবরের ওপর। “শুকুর মিঞা বল্লে দ্যাও বাবাঠাকুর, তুমিও
দ্যাও--তুমি দিলে মহাপ্রাণী ঠাণ্ডা হবে-দিলাম এক কোদাল মাটি। সঙ্গে সঙ্গে মনে হলো,
ও বেঁচে থাকলে বলে উঠতো-অ মোর গোপাল।”
মাসি পিসি গল্পের বিষয়বস্তু এখানে
শহুরে গ্রাম্য, হিন্দু মুসলমান, ধনী নির্ধন, ভদ্রলোক চাষালোক-সমস্ত বিভেদের প্রাচীর ভেঙে এক মহান মিলনক্ষেত্রে মিলেছে জমির করাতীর বুড়ী বৌ আর শিক্ষিত হিন্দু নায়ক। ‘অ মোর গোপাল', এই আহ্বানে ধ্বনিত হয়েছে মহামিলন সঙ্গীত। এক সমুদ্র-গভীর স্নেহে প্লাবিত হয়ে যায় আমাদের মন। শিক্ষিত নাগরিক মনের বিরক্তিকে ছাপিয়ে উঠেছে বুড়ীর প্রতি নায়কের এক অপরূপ স্নেহ-ভালবাসা। মুসলমান বুড়ীর স্নেহের গ্রাম্য অভিব্যক্তিতে শেষ পর্যন্ত স্নাত ও অভিষিক্ত হয়েছে হিন্দু যুবক। ধর্ম-সমাজ শ্রেণীগত সব বিভেদ ব্যবধানকে ছপিয়ে উঠেছে মানুষে মানুষে গভীর ভালবাসার সম্পর্ক, জয়ী হয়েছে মাতৃত্বের মহিমা। বিভূতিভূষণ এক পরিণত শিল্প-সারল্যে রচনা করেছেন এই গল্প। 'আহ্বান' গল্প আধুনিক ভারতীয় কথাসাহিত্যে স্মরণীয় গল্পরূপে বিবেচনার যোগ্য। গল্পরচনার সমস্ত কৌশলকে সংহরণ করে নিয়ে বিভূতিভূষণ লিখেছেন মাতৃত্বের ধারায় অভিষিক্ত এই গল্প। একে ঘিরে আছে এমন এক শুচিতা, এমন এক মহিমা, এমন এক পবিত্রতা যার সফল শিল্পরূপ বিরলদর্শন।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
০১. লেখকের বাবার
পুরাতন বন্ধুর নাম?- চক্কোত্তি মশায় ৷
০২. “বাড়িঘর
করবে না?” উক্তিটি- চক্কোত্তি মশায়।
০৩. বড় আম বাগানের
মধ্য দিয়ে বাজারে যাচ্ছে- লেখক।
০৪. বুড়ির স্বামীর
নাম?- জমির করাতি ।
০৫. বুড়ির স্বামী
কাজ করতেন- করাতের।
০৬. বুড়ির আছে-
এক নাত জামাই ।
০৭. লেখক থাকে-
এক জ্ঞাতি খুড়োর বাড়ি ।
০৮. অনুযোগ শব্দের
অর্থ নালিশ ।
০৯. বুড়ির মৃত্যুর
পূর্বে গোপাল গ্রামে এলো-৩ বার ।
১০. গোপাল বুড়িকে
অসুস্থ দেখে- আশ্বিন মাসে এসে।
১১. বুড়ি আপন
মনে খুব খানিকটা বকে গেল- কাঠালতলায় বসে।
১২. পরদিন লেখক
চলে গেল- কলকাতা ।
১৩. লেখক তার
নতুন তৈরি খড়ের ঘরখানাতে এসে উঠল- জ্যৈষ্ঠ মাসে, গরমের ছুটিতে।
১৪. লেখকের মা-পিসি
মারা গেছে- বাল্যকালে ।
১৫. লেখক খায়-
খুড়ো মশায়ের বাড়ি।
১৬. লেখককে দুধ
দেয়- ঘুঁটি গোয়ালিনী।
১৭. বুড়ি লেখককে
সম্বোধন করল- গোপাল বলে ৷
১৮. 'সে কি!
দুধ পেলে কোথায় এতো সকালে' উক্তিটি- লেখকের ।
১৯. বুড়িকে
মা বলে ডাকে- হাজরা ব্যাটার বউ।
২০. “স্নেহের
দান-এমন করা ঠিক হয়নি” উক্তিটি- লেখকের।
২১. লেখক পুনরায়
গ্রামে আসল- পাঁচ ছয় মাস পর, আশ্বিন মাসের শেষে ।
২২. বুড়ি শুয়ে
আছে- মাদুরের উপর।
২৩. বুড়ির মাথার
বালিশটা ছিলো- মলিন।
২৪. আহ্বান গল্পে
কলকাতা চলে গেল-গোপাল ।
২৫. কবর খুঁড়ছে-
দুই জন জোয়ান ছেলে।
লালসালু উপন্যাসের বিষয়বস্তু ক্লিক করুন
২৬. বুড়িকে
ভাত দেয় না- বুড়ির নাতজামাই।
২৭. আহ্বান গল্পে
গল্পকার গ্রামে এসেছিলেন-৪ বার ।
২৮. লেখক শরতের
ছুটিতে গ্রামে ঢুকতেই দেখা হল- পরশু সর্দারের বউ/ দিগম্বরীর সাথে ।
২৯. “ওমা আজই তুমি এলে-- উক্তিটি দিগম্বরীর
৩০. বুড়ি কোন ঋতুতে মারা
যায়- শরত ।
৩১. চক্কোত্তি- 'চক্রবর্তী'
উপাধীর সংক্ষিপ্ত রূপ। পূজারী ব্রাক্ষ্মণের উপাধিবিশেষ ।
৩২. পাতিলেবু- ছোট লেবু।
ক্ষুদ্রান্তে 'পাতি' উপসর্গযোগে গঠিত হয়েছে।
৩৩. মাদুর- তৃণ নির্মিত এক
প্রকার পাটি।
৩৪. “দ্যাও বাবা, তুমি দ্যাও”
উক্তিটা- শুকুর মিয়ার ।
৩৫. আহ্বান গল্পে কতটি চরিত্রের
নাম উল্লেখ রয়েছে-১৩টি।
৩৬. বুড়িকে মা বলে ডাকে-
হাজরা ব্যাটার বউ ।
৩৭. আহ্বান গল্পে ৪টি ফলের
নাম রয়েছে - কাঁঠাল, আম, পাতি লেবু, শসা ।
৩৮. 'আহ্বান' গল্পে কলকাতা
চলে গেল কে? উ: গোপাল ৷
৩৯. গোপাল খাওয়া-দাওয়া
করে কোথায়? উ: খুড়ো মশায়ের বাড়িতে।
৪০. বৃদ্ধা হাতের নড়ি রাখে
কিভাবে? উ: দাওয়ার গায়ে ঠেস দিয়ে ।
৪১. একটু ঘাবড়ে গেল কে?
উ:বুড়ি।
৪২. বুড়ি গোপালকে কি কিনে
দিতে বলল? উ: কাফনের কাপড় ।
৪৩. লেখকের সঙ্গে পড়তো কে?
উ: আবেদালি ।
৪৪. গোপালের বাবার পুরাতন
বন্ধু কে? উ: চক্কোত্তি মশায় ৷
৪৫. বুড়ি যাচ্ছিল কোথায়?
উ: বাজারে।
৪৬. বুড়িকে ভাত দেয় না
কে? উ: বুড়ির নাতজামাই ।
৪৭. গোপাল থাকে কোথায়? উ:
এক জ্ঞাতি খুড়োর বাড়িতে।
৪৮. চোখে একটু কম দেখে কে?
উ:বুড়ি।
৪৯. শুকুর মিয়া বয়সে কেমন?
উ: প্রবীণ ।
৫০. স্নেহ পাওয়ার জন্য যে
কাতর তাকে কি বলে? উ: স্নেহাতুর ।
৫১. বুড়ির ডান হাতের নড়ি
কেমন করছিল? উ: ঠক্ঠক্ ।
৫২. গোপালকে প্রত্যহ দুধ
দিত কে? উ: খুঁটি গোয়ালিনী।
৫৩. তৃতীয়বারের মতো প্রাবন্ধিক
গ্রামে আসে কোন মাসে? উ: আশ্বিন মাসের শেষে।
৫৪. ‘তারও কেউ নেই।'- কথা
বলা হয়েছে কার সম্পর্কে? উ: হাজারা ব্যাটার বউ।
৫৫. লেখক যাদের পাশে গিয়ে
বসল তারা হল- আবদুল, শুকুর মিয়া, নসর।
৫৬. আবেদালির ছেলের নাম- গণি।