দ্বন্দ্ব সমাস
০১. দম্পতি- জয়া ও পতি-(দ্বন্দ্ব)। {স্বরাষ্ট্র’১০,সহ জজ’০৮}
০২. ঘরে বাইরে- ঘরে ও বাইরে। (অলুক দ্বন্দ্ব)। {প্রাথ.প্রধান (গো)’১২,প্রাই শি’০৯}
০৩. হাটে বাজারে- হাটে ও বাজারে। (সমার্থক দ্বন্দ্ব) {উপ পরিদর্শক’১৩}
০৪. অহিনকুল- অহি ও নকুল। (বিরোধার্থক দ্বন্দ্ব)। {পরিদর্শক’১৩, প্রাই শিক্ষক’১১,১০}
০৫. আমি, তুমি ও সে- (দ্বন্দ্ব)। {উচ্চমান সহকারি(মৎস্য)’১১}
ব্যাখ্যাঃ- যে সমাসে প্রত্যেকটি সমস্যমান পদের অর্থ প্রাধান্য থাকে এবং ব্যাসবাক্যে ‘ও’, ‘এবং’, ‘আর’ অব্যয় যুক্ত থাকে তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে। উপরিউক্ত উদাহরণগুলিতে ব্যাসবাক্যেল অর্থে প্রাধান্য পেয়েছে এবং তা অব্যয় দ্বারা যুক্ত হয়েছে।
দ্বিগু সমাস
০৬. শতাব্দী- শত অব্দের সমাহার-(দ্বিগু)। {অর্থ মন্ত্র’০৪}
০৭. ত্রিভূজ- তিন ভূজের/কোণের সমাহার-(দ্বিগু)। {উপ,নির্বাচন অফিসার’০৯}
০৮. সেতার- তিন তারের সমাহার-(দ্বিগু)। {প্রাই শি(করো)’১০}
০৯. সাত সমুদ্র- সাত সমুদ্রের সমাহার-(দ্বিগু)। {শিক্ষক নিব’১১}
১০. সপ্তর্ষি- সাত ঋষির সমাহার- (দিগু)। {প্রাথ.প্রধান (গো)’১২}
১১. তেপান্তর- তিন প্রান্তের সমহার। (দ্বিগু)। {প্রাক,প্রাই(শীত)’১৩, শিক্ষক নিব’১১}
ব্যাখ্যাঃ- সমহার(সমষ্টি) মিলনার্থক অর্থে সংখ্যাবাচক শব্দের সাথে বিশেষ্য পদের যে সমাস হয়, তাকে দিগু সমাস বলে। দিগু সমাসে নিষ্পন্ন পদটি বিশেষ্য হয়। এখানে পূর্বপদ গুলি সংখ্যা বাচক।
বিগত বছরের এককথায় প্রকাশ প্রবেশ করুন
১২. নীল আকাশ/নীল অম্বর- নীল যে আকাশ/নীল অম্বর যার। (কর্মধারায়)। {প্রাইমারি(গামা)’১৪,পরিদর্শক’১৩, প্রাইমারি’১০}
১৩. বিষবৃক্ষ- বিষ সদৃশ বৃক্ষ। (কর্মধারায়)। {প্রাক.প্রাই(বু)’১৩প্রাই.শি’০৬}
১৪. খাস মহল- খাস যে মহল। (কর্মধারায়)। {প্রাক.প্রাই(শীত)’১৩}
১৫. কদাচার- কু যে আচার- (কর্মধারায়)। {প্রাথ.প্রধান (জবা)’১২,প্রাই শি’০৯}
১৬. শ্বেত বস্ত্র- শুভ্র যে বস্ত্র- (কর্মধারায়)। {প্রাথ.প্রধান শি(বেলি)’১২}
১৭. মহর্ষি- মহান যে ঋষি- (কর্মধারায়)। {প্রাই,প্রধান শি(প)’১২, প্রাই প্রধান শি’০৯}
১৮. ইত্যাদি- ইতি হতে আদি- (কর্মধারায়)। {প্রাই,প্রধান শি(সুরমা)’১২}
১৯. ঈগল পাখি- ঈগল নামের যে পাখি-(কর্মধারায়)। {প্রাই,প্রধান শি(সুরমা)’১২}
২০. শশব্যাস্ত- শশকের ন্যায় ব্যস্ত-(কর্মধারায়)। {রেজি,প্রাই(হাসনা)’১১}
২১. হারামণি- হারিয়েছে যে মণি- (কর্মধারায়)। {রেজি,প্রাই(শাপলা)’১১}
২২. নব পৃথিবী- নব যে পৃথিবী-(কর্মধারায়)। {প্রভাষক নিব’১১}
২৩. রাজর্ষি- যিনি রাজা তিনিই ঋষি-(কর্মধারায়)। {হিসাব সহকারি’১১}
২৪. হইকাল- হই যে কাল-(কর্মধারায়)। {প্রাই শি(সুরমা)’১০}
২৫. ঋষি কবি- যিনি ঋষি তিনি কবি-(কর্মধারায়)। {প্রাই শি(তিতা)’১০}
ব্যাখ্যাঃ- বিশেষ্য এবং বিশেষণ পদের সাথে যে সমাস হয় এবং পর পদের অর্থই প্রাধান্য পায় তাকে কর্মধারায় সমাস বলে। এখানে পূর্বপদ বিশেষণ এবং পরপদ বিশেষ্য, তাই এটি কর্মধারায় সমাস। কর্মধারায় সমাস আরো কয়েকটি প্রকারে সাধিত হয়।
- দুটি বিশেষণ পদে একটি বিশেষ্য বোঝালে। যেমন- যে চালাক সেই চতুর।
- দুটি বিশেষ্য পদে একই ব্যক্তিকে বুঝালে। যেমন- যিনি রাজা তিনিই ঋষি।
- পূর্বপদে স্ত্রীবাচক বিশেষণ থাকলে কর্মধারয় সমাসে সেটি পুরুষ বাচক হয়। যেমন- সুন্দরী যে লতা- সুন্দর লতা।
- পূর্বপদে মহৎ বা মহান থাকলে ‘মহা’ হয়। যেমন- মহান যে নবী- মহানবী।
- পূর্বপদে কু থাকলে ‘ক’ হয়। যেমন- কু যে আচার- কদাচার।
- পরপদে ‘রাজা’ থাকলে সমাসে তা রাজ হয়। মহান যে রাজা- মহারাজ।
- বিশেষণ ও বিশেষ্য পদে সমাস হলে কখনো কখনো বিশেষণ পরে আসে, বিশেষ্য আগে যায়। যেমন- সিদ্ধ যে আলু- আলুসিদ্ধ
মধ্যপদলোপী কর্মধারায়
২৬. মৌমাছি- মৌ সংগ্রহ করে যে মাছি। (মধ্যপদলোপী কর্মধারায়)। {শিক্ষক নিব, প্রাই শি’১২}
২৭. পলান্ন- পল মিশ্রিত অন্ন- (মধ্যপদলোপী কর্মধারায়)। {প্রাই,প্রধান শি(কর্ণ)’১২}
২৮. স্মৃতি সৌধ- স্মৃতি রক্ষার্থে সৌধ-(মধ্যপদলোপী কর্মধারায়)। {বিদ্যুৎ ও খনিজ মন্ত্র’১১}
২৯. সিংহাসন- সিংহ চিহ্নিত যে আসন-(মধ্যপদলোপী কর্মধারায়)। {কৃষি ব্যাঙ্ক’১০, পল্লী উন্নয়ন’০৯}
৩০. হাসিমুখ- হাসি মাখা মুখ-(মধ্যপদলোপী কর্মধারায়)। {১৩তম, প্রাই শি(সুরমা)’১০}
৩১. চাল কুমড়া- চালো ধরে যে কুমড়া-(মধ্যপদলোপী কর্মধারায়)। {প্রাই শি(সুরমা)’১০}
৩২. গোবর গণেশ- গোবরের মতো গণেশ- (মধ্যপদলোপী কর্মধারায়)। {তথ্য মন্ত্র’০৩}
যে কর্মধারায় সমাসে ব্যাসবাক্যের মধ্য পদগুলো লোপ পায় তাকে মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস বলে। এখানে পূর্বপদ এবং পরপদ এর মাঝে ব্যাসবাক্য লোপ পায় তাই এটি মধ্যপদলোপী কর্মধারায়।
নিয়োগ পরীক্ষার বাগধারা ডাউনলোড
উপমান/উপমিত
৩৩. ফুলকুমারী- কুমারী ফুলের ন্যায়- (উপমিত কর্মধারায়)। {থানা শিক্ষা’১২}
৩৩. করপল্লব- কর পল্লবের ন্যায়- (উপমিত কর্মধারায়)। {পরিবার’১২}
৩৪. কাজলকালো- কাজলের ন্যায় কালো- (উপমান কর্মধারায়)। {জাতীয় সংসদ ব্যক্তিগত কর্ম’১২}
বিশ্লেষণঃ- উপমান অর্থ তুলনীয় বস্তু। প্রত্যক্ষ কোনো বস্তুর সাথে পরোক্ষ কোনো বস্তুর তুলনা করলে প্রত্যক্ষ বস্তুটিকে উপমেয়, আর যার সঙ্গে তুলনা করা হয় তাকে উপমান বলে। উপমান ও উপমেয়ের একটি সাধারণ ধর্ম থাকবে।
আবার, সাধারণ গুণের উল্লেখ না করে উপমেয় পদের সাথে উপমান পদের যে সমাস হয় তাকে উপমিত কর্মধারায় বলে। এ সমাসে উপমেয় পদটি আগে বসে। উদাহরণে বর্ণিত ফুলকুমারী বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, উপমেয় (ফুল/কর) পূর্বপদে বসেছে।
তৎপুরুষ
৩৫. মধূমাখা- মধুতে মাখা-(তৎপুরুষ)। {প্রাইমারি(আলফা)’১৪,এলজিইডি’০৫}
৩৬. পাপ মুক্ত- পাপ হতে মুক্ত-(তৎপুরুষ)। {প্রাই,শিক্ষক’১০}
অলুক তৎপুরুষ
৩৭. মুখে ভাত- মুখেভাত-(অলুক তৎপুরুষ)। {প্রাই শি(ইছা)’১০}
৩৮. তেলে ভাজা- তেলে দিয়ে ভাজা/তেলে ভাজা যা- (অলুক তৎপুরুষ)। {প্রাথ.প্রধান শি(শা)’১২,প্রাই শি’০৯}
৩৯. কলে ছাটা- কলে ছাটা। (অলুক তৎপুরুষ)। {কারা তত্ত্বা, প্রাক প্রাই(প)’১৩}
২য়া/৩য়া/৪র্থী
৪০. হজ্বযাত্রা- হজ্বের নিমিত্তে যে যাত্রা-(৪র্থী তৎপুরুষ)। {প্রাই শি(কপো)’১০}
৪১. বইপড়া- বইকে পড়া। (দ্বিতীয়া তৎপুরুষ)। {প্রাক.প্রাই’১৩(সু)}
৪২. মেঘশুন্য- মেঘ দ্বারা শুন্য। (তৃতীয়া তৎপুরুষ)। {প্রাক.প্রাই(বু)’১৩}
৪৩. রাজপুত্র- রাজার পুত্র। (ষষ্ঠী তৎপুরুষ)। {বা.রেলওয়ে’১৩}
ব্যাখ্যঃ- পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পেয়ে যে সমাস হয় এবং যে সমাসে পরপদের অর্থ প্রাধান্য পায় তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে। এখানে পূর্ব পদে (বই’কে) ২য়া বিভক্তি লোপ পেয়ে ২য়া তৎপুরুষ (রাজা’র) ৬ষ্ঠী তৎপুরুষ লোপ সমাস হয়েছে ।
উপপদ তৎপুরুষ
৪৪. খেচর-আকাশে উড়ে যে-(উপপদ তৎপুরুষ)। {পার্সপোর্ট’০৭}
৪৫. প্রিয়ংবদা- প্রিয় কথা বলে যে/প্রিয়ম্ বলে যে নারী- (উপপদ তৎপুরুষ)। {পল্লী উন্নয়ন’১২}
বিশ্লেষণঃ- যে পদের পরবর্তী ক্রিয়ামূলের সাথে কৃৎ-প্রত্যয় যুক্ত হয় সে পদকে উপপদ বলে। কৃদন্ত পদের সাথে উপপদের যে সমাস হয় তাকে উপপদ তৎপুরুষ সমাস বলে।
নঞ তৎপুরুষ
৪৬. বেতমিজ- ন-তমিজ-(নঞ তৎপুরুষ)। {স.মাধ্যমিক শিক্ষক’০৬}
৪৭. অনুচিত- নয় উচিত- (নঞ্ তৎপুরুষ)। {প্রাথ.প্রধান (গো)’১২}
বিশ্লেষণঃ- না বাচক অব্যয় (না,নেই,নাই,নয়) পূর্বে বসে যে তৎপুরুষ সমাস হয়, তাকে নঞ্ তৎপুরুষ সমাস বলে।
বিগত বছরের পরীক্ষার কারক সমাধান ডাউনলোড
বহুব্রীহি
৪৮. দিগম্বর- দিগ অম্বর যার- (বহুব্রীহি)। {প্রাক.প্রাই’১৩(সু)}
৪৯. সুগন্ধি- সুগন্ধ আছে যার-(বহুব্রীহি)। {প্রাই শি(তিতা)’১০}
৫০. অবোধ- নেই বোধ যার-(বহুব্রীহি)। {রেজি,প্রাই(হাসনা)’১১}
৫১. দশানন- দশ আনন যার- (বহুব্রীহি)। {রেজি,প্রাই(গো)’১১}
৫২. আশীবিষ- আশীতে বিষ আছে যার- (বহুব্রীহি)। {শিক্ষক নিব’১২,রেজি.প্রাই,বিটিভি’১১}
৫৩. যে বহুব্রীহি সমাসের পূর্বপদ ও পরপদ উভয়ই বিশেষ্য থাকে তাকে ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি সমাস বলে। {সহ,সার্জন’০৫}
৫৪. অর্ধচন্দ্র- অর্ধ প্রকাশিত চন্দ্র-(বহুব্রীহি)। {আমদানি রপ্তানি অধি’০৭}
বিশ্লেষণঃ- যে সমাসে পদগুলোর কোনোটির অর্থ না বুঝিয়ে, অন্য কোনো পদকে বোঝায়, তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন- অর্ধচন্দ্র দ্বারা অর্ধেক চাঁদ না বুঝিয়ে গলাধাক্কা দেওয়া বুঝানো হয়েছে।
ব্যাতিহার বহুব্রীহি
৫৫. মুখোমুখি- মুখে মুখে যে কথা- (ব্যাতিহার বহুব্রীহি)। {প্রাই,প্রধান শি(প)’১২, প্রাই প্রধান শি’০৯}
৫৬. কানাকানি- কানে কানে যে কথা- (ব্যাতিহার বহুব্রীহি)। {প্রাই,প্রধান শি(প)’১২}
৫৭. লাঠালাঠি- লাঠিতে লাঠিতে যে লড়াই। (ব্যাতিহার বহুব্রীহি)। {প্রাইমারি(ডেলটা)’১৪,হিসাব,উচ্চমান সহ’১৩, সঞ্চয় পরি’০৯}
বিশ্লেষণঃ- ক্রিয়ার পারস্পারিক অর্থে ব্যতিহার বহুব্রীহি হয়। এ সমাসে পূর্বপদে আ,এ,ও এবং উত্তরপদে ‘ই’ যুক্ত হয়। যেমন লাঠালাঠি’র পূর্ব পদে (লাঠা/আ) এবং উত্তরপদে (লাঠি/ই) ব্যবহার হয়েছে।
অব্যয়ীভাব সমাস
৫৮. উপকূল- কূলের সমীপে। (সমীপ্য অর্থে অব্যয়ীভাব)। {কারা তত্ত্বা’১৩, পরিবার’১১, প্রাই শি’০৬}
৫৯. অসুখ- নাই সুখ যার- (অব্যয়ীভাব)। {প্রাই,প্রধান শি(কর্ণ)’১২}
৬০. আমরণ- মরণ পর্যন্ত-(অব্যয়ীভাব)। {প্রাই,প্রধান শি(করোতয়া)’১২}
৬১. অনুতাপ- তাপের পশ্চাৎ-(অব্যয়ীভাব)। {রেজি,প্রাই’১১ শিক্ষক নিব’১০}
৬২. হাভাতে- ভাতের অভাব-(অব্যয়ীভাব)। {সমাজসেবা অধি’০৫}
বিশ্লেষণঃ- পূর্বপদে অব্যয় যুক্ত নিষ্পন্ন সমাসে যদি অব্যয়েরই অর্থের প্রাধান্য থাকে, তবে তাকে অব্যয়ীভাব বলে।
নিত্য সমাস
৬৩. দেশান্তর- অন্য দেশ-(নিত্য সমাস)। {১১তম শিক্ষক নিবন্ধন’১৪,রেজি,প্রাই’১১,প্রাই (ইছা)’১০}
ব্যাখ্যাঃ- যে সমাসে সমস্যমান পদগুলো নিত্য সমাসবদ্ধ থাকে, ব্যাসবাক্যের প্রয়োজন হয় না। তাকে নিত্য সমাস বলে।