ভাষাতত্ত্ব কাকে বলে? ভাষাতত্ত্ব বিচারের পদ্ধতিগুলো আলোচনা কর। ভাষাতত্ত্ব বিচারের পদ্ধতিগুলোর উপযোগিতা আলোচনা কর। কোন পদ্ধতিটি বেশী গ্রহণযোগ্য?
জবাবঃ-
ভাষা নদীর স্রোতের মত স্বতঃপ্রবাহিণী। কিন্তু নিয়তই সে গতিপথ পরিবর্তন করে চলে। ভাষার
জন্ম বা বিকাশ হয়েছে মানুষের সামাজিক বোধ ও অন্তর প্রেরণা থেকে। মানুষের মনের বাইরে
কোন স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নেই। সুতরাং মানুষের মনের খেয়াল অনুযায়ী নিয়ামানুবর্তিতার ব্যতিক্রম
হতে পারে এবং হয়েও থাকে। ভাষাতত্ত্ব মূলত এসব নিয়েই আলোচনা করে থাকে।
ভাষা
সম্বন্ধীয় যাবতীয় তথ্যান্বেষণ ও তত্ত্ব উদ্ধার অর্থ্যাৎ ভাষার বৈজ্ঞানিক পঠন-পাঠনই
হলো ভাষাতত্ত্ব বা ভাষাবিজ্ঞান। প্রত্যেক ভাষার মূল হল এই ভাষাতত্ত্ব বা ভাষাবিজ্ঞান।
ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ ভাষাতত্ত্বের বিষয়ভূত। প্রত্যেক ভাষারই একটি নির্দিষ্ট গতি
বা শৃঙ্খলা রয়েছে। এই শৃঙ্খলার স্বরূপ উদঘাটনই ভাষাতত্ত্বের মূল লক্ষ্য
ভাষাবিচারের
পদ্ধতিঃ- ভাষাতত্ত্বের সঙ্গে ভাষানুশীন সম্পর্কিত নানা বিষয় জড়িত রয়েছে। এগুলো ভাষাতাত্ত্বিক
ও ভাষা ব্যবহারিক এ দু দিক দিয়ে বিবেচনা করা যেতে পারে। সাধারণত তিনটি মূল ধারা বা
পদ্ধতি ভাষাবিচারের জন্য জন্য অনুসরণ করা হয়ে।
ক.
তুলনা মূলক পদ্ধতি।
খ.
ঐতিহাসিক পদ্ধতি।
গ. বর্ণনামূলক পদ্ধতি।
প্রমিত বাংলা বানানের নিয়মএখানে
ক. তুলনামূলক পদ্ধতিঃ- তুলনামূলক পদ্ধতি বলতে বোঝায় ভাষাতত্ত্বের আলোচনার সেই সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি যার মধ্যে থাকে একই সময়ে বর্তমান, একই গোত্রজাত, একই অবস্থা সম্পন্ন বিভিন্ন ভাষার রূপ ও ধ্বনিতত্ত্বগত তুলনামূলক আলোচনা যার মাধ্যমে সে ভাষার সগোত্রতা আবিষ্কার করা যায় তাকেই তুলনামূলক পদ্ধতি বলে। যেমন
B‡›`v-BD‡ivcxq |
divmx |
Bs‡iwR |
Rvg©vb |
peater |
pedar |
father |
fader |
এরকম আপাত মিল থাকলেই এক ভাষার সঙ্গে অন্য ভাষার তুলনা করা যায়। এ পদ্ধতিতে বিচার করতে হলে একই অর্থবোধক শব্দ বিভিন্ন ভাষার সূত্রসমূহ ধ্বনিগত পরিবর্তন থাকা সত্ত্বে মিল থাকা হওয়া প্রয়োজন। যেমন
B‡›`v-BD‡ivcxq |
Bs‡iwR |
ms¯‹…Z |
Gwous |
Cow |
‡Mv |
কিন্তু
এই পদ্ধতিতে শুধুমাত্র অর্থগত মিল থাকা বড় কথা নয়, বরং ভাষাদ্বয়ের ধ্বনিগত ঐক্য থাকা
প্রয়োজন। অর্থ্যাৎ । আসামীয় ও বাংলা একই উৎসজাত ও সমকালীন। কিন্তু বাংলায় ব্যবহৃত হয়
আমি আর আসামীয় বাংলায় ব্যবহৃত হয় “মই” বা “মুই” এইরূপ দুটি কিন্তু এক নয়। বাংলা আমি
এসেছে বৈদিক ‘অস্মভি’ রূপ থেকে আর আসামীয়া “মই-মুই” এসেছে বৈদিক “ময়া-ময়েন” রূপ থেকে।
কাজেই ভাষা বিচারের এই পদ্ধতিতে জীবন্ত মানুষের স্পর্শ মেলে না। তাই কিছু বৈজ্ঞানিক
উপাদান থাকলেও এই পদ্ধতিকে পুরোপুরি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলা যায় না।
খ.
ঐতিহাসিক পদ্ধতিঃ- কালস্রোতে ভাষার ক্রমবিকাশ ও উন্নতি, কালে কালে গটে তার পরিবর্তন।
জনৈক বিট্রিশ ভাষাবিদ এর মতে ভাষার ভেতর ও বাইরে নানা ভাবে ও বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত পরিবর্তনসমূহের
ধারাবাহিক ও কালানুক্রমিক পঠন-পাঠনই হচ্ছে ঐতিহাসিক ভাষাতত্ত্ব। অন্য কথায় কোনো একটি
বিশিষ্ট ভাষার শব্দরূপের বির্বতনের ইতিহাস আলোচনাকে ভাষাবিজ্ঞানের কালানুক্রমিক বা
ঐতিহাসিক পদ্ধতি বলে। যেমন
ms¯‹…Z |
cÖvK…Z |
cÖvPxb evsjv |
AvaywbK evsjv |
g¯ÍK |
gÌA |
gv_A |
gv_v |
n¯Í |
nÌA |
nv_A |
nvZ |
গ.
বর্ণনামূলক পদ্ধতিঃ- যেকোন ভাষাগোষ্ঠীর একটি মানুষের মুখের ভাষা কি আশ্চর্য কৌশলে সেই
ভাষার নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলে, উক্ত ভাষার কতগুলো মূলধ্বনি কীভাবে শব্দ তৈরি করে, শব্দের
মধ্যে ঐ ধ্বনিগুলো কেমন করে উচ্চারিত হয়, একটি ধ্বনি কখন আদি,মধ্য,অন্তে আসে, কখন আসে
না, এক ভাষার শব্দ অন্যান্য শব্দের কতগুলোর সঙ্গে কেন ব্যবহৃত হয়, আবার কতগুলোর সঙ্গে
কেন হয় না, বাক্যের শব্দ বিন্যাসের দিক থেকে কত রকমের প্রকারভেদ হতে পারে, অভিধানে
একটি শব্দের যে অর্থ বিভিন্ন পরিবেশে সেই শব্দের সেই অর্থ কতরকম পরিবর্তন হতে পারে
এর সবকিছুই বর্ণনামূলক ভাষা বিজ্ঞানে আলোচনা করা হয়।