লালসালু চরিত্র উপন্যাসের বিশ্লেষণ
লেখকের নাম : সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ
জন্ম তারিখ
: ১৫ আগস্ট, ১৯২২ খ্রি.
জন্মস্থান :
ষোল শহর চট্টগ্রাম। (আদি নিবাস নোয়াখালি)
পিতার নাম : সৈয়দ আহমউল্লাহ।( অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট
ছিলেন)
মাতার নাম : নাসিম আরা খাতুন।
শিক্ষাজীবন
মাধ্যমিক
: ম্যাট্রিকুলেশন (এসএসসি)
১৯৩৯, কুড়িগ্রাম হাইস্কুল।
উচ্চমাধ্যমিক :
১৯৪১ ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ।
উচ্চতর শিক্ষা :
বিএ(১৯৪৩), আনন্দমোহহন কলেজ, এমএ (অসমাপ্ত), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।
কর্মজীবন/পেশা
সহ-সম্পাদাক :
দি স্টেটম্যান;
সম্পাদক :
সহকারি বার্তা সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক রেডিও পাকিস্তান।
তথ্য অফিসার :
ঢাকা আঞ্চলিক তথ্য অফিস।
সাহিত্যকর্ম
ছোটগল্প :
নয়নচারা, দুই তীর ও অন্যান্য গল্প।
উপন্যাস :
লালসালু, চাঁদের অমাবস্যা, কাঁদো নদী কাঁদো, দি আগলি এশিয়ান (ইংরেজি ভাষায়; রচনা১৯৬৩)
পুরুস্কার :
বাংলা একাডেমি পুরুস্কার (১৯৬১), আদমজী পুরুস্কার (১৯৬৫), একুশে পদক (১৯৮৩)
জীবনাবসান
: মৃত্যু তারিখ : ১০ অক্টোবর, ১৯৭১
খ্রি.
মৃত্যুস্থান : প্যারিস, ফ্রান্স
লেখক সম্পর্কিত আরো কিছু
তথ্য :
সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ কি হিসেবে পরিচিত ছিলেন- কথা সাহিত্যিক।
হাতে লেখা কোন পত্রিকাটি তিনি সম্পাদনা করেন এবং কখন-
ফেনী স্কুলের ছাত্রবস্থায় (১৯৩৬) সালে ‘ ভোরের আলো’ নামের পত্রিকা।
তার প্রথম প্রকাশিত গল্পের নামঃ- হঠাৎ আলোর ঝলকানি,
ঢাকা কলেজের ম্যাগাজিনে।
তার স্ত্রী- ফরাসি নাগরিক এ্যান মেরি। (বিয়ে: ১৯৫৬)
লালসালুর ফরাসি অনুবাদের নাম-
লালসালুর ইংরেজি অনুবাদের নাম- The Tree Without Roots
‘লালসালু’ উপন্যাসে হাত দিলেন নিমতলির বাসায়। পরের বছরই
এই উপন্যাস গ্রন্থাকারে প্রকাশ করল কমরেড পাবলিশার্স।
অপরিচিতা গল্পের বিষয়বস্তু এখানে
উপন্যাসের আরো কিছু তথ্যঃ
- লালসালু উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয়- ১৯৪৮ সালে।
- এই উপন্যাসটির উর্দূ অনুবাদ প্রকাশিত হয়- করাচি থেকে(নামে)।
- ‘লালসালু’ উপন্যাসটির উর্দূ অনুবাদক- কলিমুল্লাহ।
- ‘লালসালু’ কোন ধরনের উপন্যাস- সামাজিক সমস্যামূলক উপন্যাস।
- কোনটির মদো রেল গাড়িটির দীর্ঘ ধৈর্যের সীমা নেই- অজগরের।
- দূর জঙ্গলে কি ডাকে- বাঘ।
- নিরাক পড়েছে কখন- শ্রাবণের শেষাশেষি।
- দিগন্ত পর্যন্ত স্থির হয়ে আছে- তামাটে স্থির ।
- বিস্তৃত ধানক্ষেতের একপাশে কারা আছে- তাহের-কাদের।
- একসময় ঘুরতে ঘুরতে তাহাদের নৌকা কোন সড়কটার কাছে এসে পড়ে- মতিগঞ্জের।
- নিরাকপাড়া আকাশ কাকে পাথরের মূর্তিতে রূপান্তির করেছে- অচেনা লোকটিকে(মজিদ)।
- অপরিচিত লোকটিকে দেখে অবাক হয়ে চেয়ে দেখে কারা- তাহের-কাদের।
- মোনাজাত শেষ করে অপরিচিত লোকটি কোন দিকে হাটতে শুরু করে- উত্তর দিকে।
- উত্তর দিকে খানিকটা এগিয়ে কোন গ্রাম- মহব্বতনগর।
- মহব্বতনগরে মজিদের প্রবেশটা কেমন- নাটকীয়।
- সলেমানের বাপ কোন ধরনের রোগী- হাঁপানী।
- মজিদ ছিল- গারো পাহাড়ে, মধুপুরগড় থেকে ৩ দিনের পথ।
- “অমনি করে হাটতে নাই।” কে, কাকে বলল- মজিদ, রহিমাকে।
- খোদা তা’আলার রহস্যময় দিগন্ত কার অন্তরে বিদ্যুতের মতো থেকে থেকে ঝিলিক দিয়ে উঠে- রহিমার।
- কোন মাসের শীত খোলা মাঠে হাড় কাপায়- অগ্রহায়নের।
- মাছের পিঠের মতো কবরটি কী দ্বারা আবৃত হলো- ঝালরওয়ালা সালু কাপড় দ্বারা।
- পানি সরে এলেও কোন মাসে কচুরিপানা জড়িয়ে থাকে জমিতে- কার্তিক।
- কোচ বিদ্ধ হয়ে নিহত হয় কে- ছমিরুদ্দিন।
- সালু কাপড়ে ঢাকা কাপড়টি কেমন- রহস্যময়।
- “কলমা জানো মিয়া?” মজিদ কাকে এ কথা জিজ্ঞেস করে- সাত ছেলে বাপ দুদু মিঞা।
- দুদু মিঞার সাথে এসেছিল- এক ছেলে।
- “কলমা জানস না ব্যাটা?” উক্তিটি- খালেক ব্যাপারীর।
- খালেক ব্যাপারী গ্রামে কি দিয়েছে- একটি মক্তব।
- মজিদের শক্তির মূল উৎস- মাজার।
- মজিদের শক্তি প্রতিফলিত হয়- রহিমার উপর।
- কেঁপে ওাে মোমবাতির আলোয় ঝলমল করে ওঠে- রূপালি ঝালর।
- কার বাপ মরণরোগ যন্ত্রণা পাচ্ছে- ছুনুর বাপ।
- কে পক্ষাঘাতে কষ্ট পাচ্ছে- খেতানির মা।
- কয়গ্রাম পর বড় নদী- চারগ্রাম।
- “শরীলে রং ধরছে ক্যান, নিকা করবি নাকি”? উক্তিটি- তাহেরের।
- কে এক কালে উড়–নি মেয়ে ছিল- বুড়ি।
- কোনটি ভয়ানয় বস্তু- মানুষের রসনা।
- কত হিজরিতে প্রিয় পয়গম্বরের বাণী এল- ৫ম।
- নবীজি কার বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রত্যাবর্তনকালে বিবি আয়েশা (রা) দলচ্যুত হয়ে যায়- মুস্তালিখ-এর।
- বিবি আয়েশাকে খুঁজে পায়- এক নওজোয়ান সিপাই।
- কারা হযরতের বিবির নামে কুৎসা করতে লাগল- হযরতের পেয়ারা।
- মজিদ বুড়াকে, মাজারে কত পয়সার সিন্নি দিতে বলেছে- পাঁচ পইসার।
- ঝুটিওয়ালা মুরগীরটার রং- লাল।
- মতিগঞ্জের সড়ক ধরে তিন ক্রোশ দুরে গঞ্জে গিয়েও তালাশ করা হয় কাকে- বুড়োকে।
- মজিদ কৃর্তক হাসুনির মাকে দেয়া শাড়িটির- বেগুনি রং, কালো পাড়।
- শুকতারা ঝলমল করছে- পশ্চিম আকাশে।
- ইউনিয়ান বোর্ডের প্রেসিডেন্ট কে- মতলুব খাঁ।
- রাত যত গভীর হয় আগুন তত কী হয়ে উঠে- মাথা।
- সোহবাতে সোয়ালে তুরা সোয়ালে কুনাদ’ অর্থ কি- সুসঙ্গ মানুষকে ভালো করে।
- গোস্তায় কে- কালু মিয়া।
- ভাং-গাজা খাওয়া রসকশূন্য হাড় গিলে চেহারা কার- কম্পাউন্ডারের।
- ব্যাপারীর দ্বিতীয় পক্ষের বউয়ের ভাইয়ের নাম- ধলা মিয়া।
- ধলা মিয়া কেমন মানুষ- বোকা কিছিমের।
- মজিদের বিবি রহিমার কত প্যাঁচ- চৌদ্দ।
- আমেনা বিবিকে মাজারের চারপাশে ঘুরতে হবে- সাতবার।
- কার বাড়ির কাঁঠাল গাছের তলে একটা মূর্তি নজরে পড়ে- মোল্লা শেখের।
- আমেনা বিবি কি বারে রোজা রাখে- শুক্রবারে।
- “ তোমার দাড়ি কই মিয়া”। উক্তিটি কে , কাকে করেছে?- মজিদ, আক্কাসকে।
- করিমগঞ্জের স্কুলে পড়াশুনা করেছে- আক্কাস।
- বিদেশে বহুদিন ছিল- আক্কাস।
- আক্কাসের বাবার নাম- মোদাব্বের মিঞা।
- মজিদ মহব্বতনগর গ্রামে বাস করে কতবছর ধরে- দশ, বারো বছর।
- মোটাতাজা পোলা কে- হাসুনি।
- হাসুনিরে পুষ্যি রাখার শখ কার- রহিমার।
- উৎসব ছিল কোন পাড়ায়- ডোমপাড়ায়।
- দীর্ঘ কত বছরের মধ্যে রহিমা তার স্বামীকে অনেকবার রাগতে দেখেছে- ১২ বছর।
- অবশেষে কিসের মুখে ছিপি দিয়ে মজিদ সরে যায়- আগ্নেয়গিরির।
- শত্রুর আভাস পাওয়া হরিণের চোখের মতো সর্তক হয়ে উঠে কার চোখ- জমিলার।
- মজিদের কণ্ঠে গানের মতো গুনগুনিয়ে ওঠে- পাঁচপদের ছুরা আল-ফালাক।
- জিকির করতে করতে জ্ঞান হারিয়েছিল- মজিদ।
- কাপড়ে ঢাকা মানুষকে কোরআনের ভাষায় কি বলে- মোদাচ্ছের।
- জমিলা থরথর করে কাঁপে- ক্রোধে।
- মজিদ জমিলাকে বেঁধে রাখে- মাজারে।
- মাজারটি ভেসে যায়- বন্যার পানিতে।
মাসি-পিসি গল্পের বিষয়বস্তু এখানে
গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র পরিচিতি
মজিদ
- উপন্যাসের মূল চরিত্র।
- শীর্ণদেহ।
- মোদাচ্ছের পীরের মাজার প্রতিষ্ঠা করে মহব্বতনগরে।
- কুসংস্কার, শঠতা, প্রতারণা এবং অন্ধবিশ্বাসের প্রতীক।
- মাতব্বর খালেক ব্যাপারীর সাথে স্বার্থের গাঁটছড়া বেঁধে তাহের কাদেরের বাবাকে পাগল বানিয়ে নিখোঁজ করে।
- আক্কাস আলীর স্কুল প্রতিষ্ঠা উদ্যোগ নষ্ঠ করে তাকে গ্রামছাড়া করে।
- প্রথম স্ত্রী- রহিমা।
- দ্বিতীয় স্ত্রী- জমিলা।
- সে নিঃসঙ্গ, ভ-, ধর্মব্যবসায়ী, স্বার্থপর ও শোষক প্রকৃতির।
খালেক ব্যাপারী
- সামন্তবাদ সমাজের প্রতিভূ।
- মহব্বতনগর গ্রামের মাতব্বর।
- গ্রামের সকল উৎসব ও অনুষ্ঠান তার নির্দেশে হয়।
- তার স্ত্রী দু’জন।
- মজিদের নির্দেশে তেরো বছরের দাম্পত্য জীবন ত্যাগ পূর্বক তার প্রথম বউকে তালাক দেয়।
- মাতব্বর হলেও তিনি ছিলেন শান্তিপ্রিয়, ধর্মপ্রাণ ও নরম মনের মানুষ।
রহিমা
- মহব্বতনগর গ্রামের মেয়ে।
- মজিদের প্রথম স্ত্রী।
- স্বামীর একান্ত অনুগত এবং স্বামীর গৌরবে গর্বিত।
- লম্বা, চওড়া শারীরিক শক্তি সম্পন্ন।
- লেখকের মতে, ‘রহিমা ঠা-, ভীতু মানুষ’।
- তার মন স্বামীর তুলনায় বিপরীতমুখী।
- খোদাকে ভয় পায়, মাজারকে ভয় পায়।
জমিলা
- মজিদের দ্বিতীয় স্ত্রী।
- বয়সে নিতান্ত কিশোরী। গরিব ঘরের মেয়ে।
- রহিমা তার কাছে মাতৃসম বড়বোন বলে বিবেচিত।
- রহিমার সামান্য শাসনেও তার চোখে জল আসে।
- স্বামী এবং স্বামীর বয়স নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে।
- মজিদকে প্রথম দেখে জমিলা তার ভাবি শ্বশুর মনে করে।
- মজিদের মুখে থুতু দিয়েছিল।
- মাজার, কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাসের বিপরীত।
- সন্ধ্যা হতে না হতেই ঘুমানোর অভ্যাস তার।
- জায়নামাজে সিজদারত অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়ে।
তাহের কাদেরের বাপ
- নামবিহীন এ চরিত্রটি বদরাগী ও জেদি।
- তার তিন ছেলে, এক মেয়ে (হাসুনির মা)।
- মজিদের আধ্যাত্মিক শক্তিতে অবিশ্বাসী।
- বৌ এর সাথে সবসময় ঝগড়া করে।
- বৌকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে।
- বৌও তাকে কুৎসিত ভাষায় গালাগাল দেয়।
- তার তিন ছেলে তাহের, কাদের, রতন।
- এককালে বুদ্ধিমান লোকছিল।
- বৃদ্ধ ব্যক্তি।
হাসুনির মা
- তাহের কাদেরের বোন।
- এ উপন্যাসের দুস্থ, দরিদ্র, বিধবা নারী।
- স্বামীর মৃত্যুর পর বাবার বাড়িতে থাকে।
- বাড়ি বাড়ি ধান ভানার কাজ করে।
- তার নিকা করতে আপত্তি।
- শ্বশুর বাড়িতে যেতে চায় না। তার ভাষায়, “তারা মানুষ্যি না।”
- ঝড় এলে হৈ চৈ করার অভ্যাস।
দুদু মিঞা
- সাত ছেলের বাপ।
- আধাপাকা মাথা।
- মজিদের প্রশ্নে তার মুখে ছিল লজ্জার হাসি।
- থতমত খেয়ে হাসি বন্ধ করে।
- গাধার মতো পিঠে-ঘাড়ে সমান।
- তার উক্তি ‘ আমি গরীব মুরুক্ষ মানুষ’।
আমেনা
- খালেক ব্যাপারীর প্রথম পক্ষের স্ত্রী।
- তেরো বছর বয়সে বিয়ে হয়। বর্তমান বয়স ৩০।
- সতীন তানু বিবি।
- আওয়ালপুরের পীরের পানি পড়া আনতে বলেন ব্যাপারীকে।