স্বাধীনতা এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো কবিতার ব্যাখ্য, মূলভাব ও বিশ্লেষণ।।
একটি কবিতা লেখা হবে তার
জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে
লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে
ভোর থেকে জন সমুদ্রের উদ্যান সৈকতে: ‘কখন আসবে কবি’?
ব্যাখ্যা: সকাল থেকে মুক্তিকামী লক্ষ লক্ষ মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিলেন রেসকোর্স ময়দানে।
এই শিশু পার্ক সেদিন ছিল
না,
এই বৃক্ষে ফুলে শোভিত উদ্যান সেদিন ছিল না,
এই তন্দ্রাচ্ছন্ন বিবর্ণ বিকেল সেদিন ছিল না ।
ব্যাখ্যা: বর্তমান শিশু পার্কের তৎকালীন নাম ছিল রমনা রেসকোর্স। সেই রমনা রেসকোর্সের উত্তর পাশে নির্মিত বিরাট প্রশস্ত মঞ্চ থেকে ৭ই মার্চের কালজয়ী ভাষণের মাধ্যমে তিনি বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ রচনা করেন । কিন্তু সেই স্মৃতিময় স্থানটির কোনো অস্তিত্ব এখন আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। সেখানে এখন নানা রঙ বেরঙের টুল-বেঞ্চি, খেলনার উপকরণ, আর চারিদিকে রয়েছে বাগান। ৭ই মার্চের সেই ঐতিহাসিক বিকালে এই রেসকোর্স ময়দান ছিল জনাকীর্ণ, কেননা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু তাঁর বজ্র কণ্ঠের বাণী দিয়ে স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের মুক্তির পথ দেখাবেন। মানুষের উৎসাহ আর প্রবল উদ্দীপনায় সেদিনের ঐতিহাসিক বিকাল উদ্দীপ্ত ও মুখরিত ছিল। এখন আর সেইদিন নেই। এখনকার সময়ের বিকেল বেলা হয়ে পড়েছে মলিন ও বর্ণহীন।
তাহলে কেমন ছিল শিশু পার্কে, বেঞ্চে, বৃক্ষে, ফুলের বাগানে
ঢেকে দেওয়া এই ঢাকার হৃদয়মাঠ খানি?
জানি, সেদিনের সব স্মৃতি
মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত
কালো হাত।
ব্যাখ্যা: রেসকোর্সে ময়দানের সকল চিহ্ন মুছে দিতে উদ্যত হয়েছে কিছু দেশদ্রোহী। স্মৃতিময় এই স্থানটির তাৎপর্য সুকৌশলে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
বঙ্গবাণী কবিতার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ এই লিঙ্কে
তাই দেখি কবিহীন এই বিমুখ
প্রান্তরে আজ
কবির বিরুদ্ধে কবি,
মাঠের বিরুদ্ধে মাঠ,
বিকেলের বিরুদ্ধে বিকেল,
উদ্যানের বিরুদ্ধে উদ্যান,
মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ।
কপোতাক্ষ নদ কবিতার বিশ্লেষণ এখানে
হে অনাগত শিশু, হে আগামী দিনের কবি,
শিশু পার্কের রঙিন দোলনায় দোল খেতে খেতে তুমি
একদিন সব জানতে পারবে; আমি তোমাদের কথা ভেবে
লিখে রেখে যাচ্ছি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প।
ব্যাখ্যা: কবি আগামী দিনের প্রজন্মের কাছে সঠিক ইতিহাস পৌঁছে দিতে চান। তাই তিনি ৭ই মার্চের গল্প আগামী প্রজন্মের জন্য লিখে রেখে যেতে চান।
সেদিন এই উদ্যানের রূপ ছিল ভিন্নতর।
না পার্ক না ফুলের বাগান, – এসবের কিছুই ছিল না,
শুধু একখন্ড অখন্ড আকাশ যেরকম, সেরকম দিগন্ত প্লাবিত
শুধু মাঠ ছিল দূর্বাদলে ঢাকা, সবুজে সবুজময়।
আমাদের স্বাধীনতা প্রিয় প্রাণের সবুজ এসে মিশেছিল
এই ধু ধু মাঠের সবুজে।
ব্যাখ্যা: সেদিন এখানে কোন পার্ক, ফুলের বাগান এসব কিছুই ছিল না। শুধু আকাশের মত দিগন্ত প্লাবিত একটা খোলা মাঠ ছিল। সবুজ দূর্বা ঘাসে ঢাকা মাঠটি ছিল সবুজে সবুজময়। সেদিন এখানে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের সবুজ আর এদেশের মানুষের প্রাণের সবুজ মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল।
কপালে কব্জিতে লালসালু বেঁধে
এই মাঠে ছুটে এসেছিল কারখানা থেকে লোহার শ্রমিক,
লাঙল জোয়াল কাঁধে এসেছিল ঝাঁক বেধে উলঙ্গ কৃষক,
হাতের মুঠোয় মৃত্যু, চোখে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল মধ্যবিত্ত,
নিন্মবিত্ত, করুণ কেরানি, নারী, বৃদ্ধ, ভবঘুরে
ব্যাখ্যা: সেদিন এই সবুজ মাঠে ছুটে এসেছিল কৃষক, শ্রমিক সহ নানা পেশার মানুষ। লোহার কারখানার শ্রমিক এসেছিল কপালে কব্জিতে লালসালু অর্থাৎ লাল রঙের কাপড় বেঁধে, কৃষক এসেছিল লাঙ্গল কাঁধে নিয়ে। মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, নারী, বৃদ্ধ, ভবঘুরে, কেরানি সবাই এসে জড়ো হয়েছিল এই মাঠে। মৃত্যুভয়হীন সব মানুষের চোখে-মুখে ছিল মুক্তির স্বপ্ন, অধিকারের দাবি, স্বাধীনতার চেতনা।
আর তোমাদের মতো শিশু পাতা- কুড়ানিরা দল বেঁধে।জাতি-ধর্ম-বর্ণ-পেশা-লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর মানুষ সেদিন অধীর
আগ্রহ ও আকুলতা নিয়ে রেসকোর্স ময়দানে জড়ো হয়েছিল। তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল কখন
বঙ্গবন্ধু বাঙ্গালির স্বাধীনতার ডাক দিবেন।
একটি কবিতা পড়া হবে, তার
জন্য কী ব্যাকুল
প্রতীক্ষা মানুষের: ‘কখন আসবে কবি?’ ‘কখন আসবে কবি?’
ব্যাখ্যা: সেদিন এখানে কোন পার্ক, ফুলের বাগান এসব কিছুই ছিল না। শুধু আকাশের মত দিগন্ত প্লাবিত একটা খোলা মাঠ ছিল। সবুজ দূর্বা ঘাসে ঢাকা মাঠটি ছিল সবুজে সবুজময়। সেদিন এখানে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের সবুজ আর এদেশের মানুষের প্রাণের সবুজ মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল।
মানুষ কবিতার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ পেতে ক্লিক করোএখানে
শত বছরে শত সংগ্রাম শেষে,
রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে
অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন।
তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে
উঠিল জল,
হৃদয়ে লাগিল দোলা, জন সমুদ্রে জাগিল জোয়ার
ব্যাখ্যা: তাকে দেখেই সমবেত জনতা আনন্দে আবেগে লাফিয়ে
উঠল- জনসমুদ্রের প্রাণের জোয়ার শুরু হলো।
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
ব্যাখ্যা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই ভাষণের মধ্য দিয়ে মূলত আমাদের স্বাধীনতার বীজ বপন হয়েছিল। এজন্যই কবি নির্মলেন্দু গুণ এই ভাষণটিকে অমর কবিতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।
ব্যাখ্যা: ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু
স্বাধীনতার ডাক দেন। সেইদিন থেকেই স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাঙালি আত্মপ্রকাশ করে। জন্ম
হয় বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের।
তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতার ব্যাখ্যা এখানে