প্রাণ থাকলেই প্রাণী হওয়া যায়
কিন্তু মন না থাকলে মানুষ হওয়া যায় না।
সম্প্রসারিত ভাবঃ মনুষ্যত্ব
যার আছে সে-ই মানুষ। মনুষ্যত্ববিহীন মানুষ আর বন্য প্রাণীর মধ্যে কোন হিংস্র
পশুর মতো আচরণই তার স্বাভাবিকতার অন্তরে
অপরের জন্য মমত্ববোধ জেগে উঠে না, লক্ষণ।
মানুষের চেয়ে বিশাল তফাৎ নেই। যে মানুষের
মধ্যে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটে না, যার সে
‘মানুষ’ নামের অযোগ্য। আকৃতির প্রাণীও
পৃথিবীতে আছে; কিন্তু তাদের বুদ্ধি-বিবেক নেই বলে তারা ভালমন্দ বুঝার ক্ষমতা রাখে না।
মনই হচ্ছে মানুষের হিরনায় শিখা— যার আলোতে মানুষ পায়
কাঙ্ক্ষিত পথের সন্ধান। মানুষ হচ্ছে ‘আশরাফুল মাখলুকাত' অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব। প্রাণের দিক থেকে মানুষের
সাথে অন্যান্য প্রাণীর পার্থক্য না থাকলেও মনের দিক দিয়ে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। মন আছে বলেই মানুষ মঙ্গলের পথে কল্যাণের
পথে, সত্য ও ন্যায়ের পথে চলতে অভ্যস্ত।
কবি ঈশ্বরগুপ্তের ভাষায়, "ধনের মানুষ মানুষ নয়, মনের মানুষই মানুষ। আমি ধন দেখিয়া তোমায় সমাদর করিব না, সিংহাসন দেখিয়া তোমায়
সম্মান করিব না, বাহুবলের জন্য তোমায় সন্ধান করিব না, কেবল মন দেখিয়াই তোমার পূজা করিব।”
আরো পড়ুন লোভে পাপ পাপে মৃত্যু এখানে
মন্তব্য: কেবল প্রাণ থাকলেই মানুষকে মানুষ বলা যায় না— তার মাঝে
মন ও মননশীলতার অস্তিত্ব থাকতে হবে।
কেননা মনই মানুষকে পশুত্ব থেকে মনুষ্যত্বে রূপান্তরিত করে।
প্রাণ থাকলেই প্রাণী হওয়া যায়
কিন্তু মন না থাকলে মানুষ হওয়া যায় না।
প্রাককথা: মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব।। মহান
সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীতে একমাত্র মানুষেরই বিবেক-বুদ্ধি, জ্ঞান এবং হুস দিয়েছেন। এসবের
সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে তার ভেতরের মনুষ্যত্ব ফুটে উঠে।
মূলভাব: পৃথিবীতে যে সকল জীব-জানোয়ারের প্রাণ আছে তারা সবাই প্রাণী, কিন্তু
মানুষের মন প্রাণ আছে বলে সে প্রাণী হয়েও মানুষ।
সম্প্রসারিত ভাব: যাদের প্রাণ আছে তারাই
প্রাণী। এদিক থেকে বিচার করলে মানুষ ও প্রাণী । পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণীর সাথে
মানুষের ব্যবধান অনেক। মানুষের মন আছে পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণীর মন নেই। মানুষের
এই মনের জন্য তার ভেতর কতগুলো মানবীয় বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হয়। মন আছে বলেই মানুষের হৃদয়বৃত্তি বিকাশের
সুযোগ রয়েছে। মনের বিকাশ মানে মহৎ গুণাবলী অর্জন। গুণাবলী অর্জন করেই মানুষ
মানুষের মর্যাদা পায়, প্রাণের উপর নির্ভর করে নয়। একমাত্র মনের উপর নির্ভর করে
মানুষ মানুষ হিসেবে পরিচিতি পায়।
মন্তব্য: মানুষ এবং ইতর প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য
হচ্ছে মন। মনের গুণেই মানুষ মানুষ হিসেবে পরিচিত। প্রতিটি মানুষের কর্তব্য এই মনের
সঠিক প্রয়োগ। মনকে হীন করে কেউ যেন পশুর কাতারে সামিল না হয়। প্রতিটি মানুষকেই
সুস্থ্য মনের অধিকারী হতে হবে।
আরো পড়ুন দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিতাজ্য এখানে