দুঃসাহসী অভিযাত্রীরা মানুষের চিরন্তর
কল্পনার রাজ্য চাঁদের দেশে পৌছেছেন এবং মঙ্গলগ্রহেও যাওয়া জন্য তারা প্রস্তুত হচ্ছেন।
অভিযাত্রী+রা,
মানুষ+এর, কল্পনা+র ,মঙ্গলগ্রহ+এ
বাক্যটি মূল শব্দের
পর যুক্ত হওয়া ‘রা, এর, র, এ’ অতিরিক্ত বর্ণ বা বর্ণাংশ গুলিকে আমরা বিভক্তি হিসেবে
চিনি ও জানি। সুতরাং পদ বলতে আমরা বুঝে থাকি বিভক্তি যুক্ত শব্দকে পদ বলে।
পদের শ্রেণিবিভাগ
পদগুলো প্রধানত দুই প্রকার
ক. সব্যয় পদ খ. অব্যয় পদ
সব্যয় পদ : যে পদের পরিবর্তন ঘটে তাকে সব্যয়
পদ বলে।
সব্যয় পদ প্রকারভেদ
ক. বিশেষ্য= নাম পদ
খ. বিশেষণ
গ. সর্বনাম
ঘ. ক্রিয়া= ক্রিয়াপদ
নামবাচক বিশেষ্য- যে পদ দ্বারা কোনো কিছুর নাম বোঝানো হয় তাকে নামবাচক বিশেষ্য বলে।
- ব্যক্তির নাম- রহিম, করিম
- ভৌগোলিক নাম- ঢাকা, লন্ডন, দিল্লী
- ভৌগোলিক সংজ্ঞা- (নদী, সমুদ্র, পর্বত) মেঘনা, হিমালয়, আরব সাগর
- গ্রন্থের নাম- আল কোরআন, আল হাদিস
জাতিবাচক বিশেষ্য- যে পদ দ্বারা একজাতীয় প্রাণী বা পদার্থের সাধারণ নাম বোঝায়
তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে। মানুষ, গোরু, পাখি
সমষ্টিবাচক বিশেষ্য- যে পদ বেশ কিছু সংখ্যক ব্যক্তি বা প্রাণীর সমষ্টি বোঝায় তাকে
সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। সেনাবাহিনী, পুলিশ, গোরুর পাল
বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য: যে পদে কোনো উপাদনবাচক পদার্থের নাম বোঝায় তাকে
বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য বলে। এই জাতীয় বস্তুর সংখ্যা বা পরিমাণ নির্ণয় করা
যায়। বই, খাতা, কলম।
ভাববাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্যপদ ক্রিয়ার কাজ করে কিন্তু ক্রিয়া নয়। দেখা>দর্শন,
খাওয়া> ভোজন
- তাকে দেখা মাত্রই আমি চলে আসলাম
- তাকে দর্শনমাত্রই আমি চলে আসলাম
বিশেষণ- ৫টা বিষয়
{বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়া}
১. দোষ- খারাপ ছেলে
২. গুণ- ভালো মেয়ে
৩. অবস্থা- তাজা মাছ
৪. সংখ্যা- দশ টাকা
৫. পরিমাণ- দশ কেজি
বিশেষণ পদ ২ প্রকার
ক. নামবাচক বিশেষণ-
বিশেষ্য+সর্বনাম
- গুণবাচক বিশেষণ(+/-)- দক্ষ লোক
- রূপবাচক বিশেষণ- নীল আকাশ
- সংখ্যাবাচক বিশেষণ- বিশ টাকা
- পরিমাণবাচক বিশেষণ- দশ গজ কাপড়
- ক্রমবাচক বিশেষণ- প্রথম ছাত্রটি ভালো
- উপাদানবাচক বিশেষণ- সোনার আংটি
- অবস্থাবাচক বিশেষণ- বাসি মাছ
- প্রশ্নবোধক বিশেষণ- কেমন অবস্থা?
- নির্দিষ্টতাজ্ঞাপক বিশেষণ- এই লোক/ঐ ছেলেটি {পদাশ্রিত নির্দেশক}
খ. ভাববাচক বিশেষণ- বিশেষ্য ও সর্বনাম বাদে অন্যপদকে বিশেষায়িত করে
বিশেষণের বিশেষণ- যে বিশেষণ পদ অন্য একটি বিশেষণপদ কে বিশেষায়িত করে।
- আসলে(মূলত/প্রকৃত) খুবই ভালো ছেলে
বিশেষণীয় বিশেষণ- যে পদ বিশেষণ বা ক্রিয়াপদকে বিশেষায়িত করে।
- রটেক অতি দ্রুত চলে {Rocket runs very fast}
অব্যয়ের বিশেষণ- যে বিশেষণ পদ অব্যয়কে বিশেষায়িত করে।
- অনেক ঘেউ ঘেউ
- শত ধিক্ তারে যে জন নির্লজ
বাক্যের বিশেষণ- যে বিশেষণ পদ বাক্যটিকে বিশেষায়িত করবে।
- সৌভাগ্যক্রমে এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম
- বাংলাদেশি পড়ুয়া ভালো ছেলে।
অব্যয় পদ
যার কোনো ব্যয় নেই তাকে বলি অব্যয়। অর্থ্যাৎ যে পদে কোনো রূপান্তর ঘটে না তাকে অব্যয় পদ বলে।
আমি এবং/ও/আর রহিম বাজারে যাই।
ক. সমুচ্চয়ী অব্যয়- ৪টা
সংকোচক অব্যয়- বটে, বরং, কিন্তু- যাবো কিন্তু খাবো না ১+, ১-
বিয়োজক অব্যয়- অথবা, নতুবা, নইলে {বাদ দেয়া}
তুমি অথবা আমি যাবো,
অনুগামী- সংযোজক অব্যয় নয় কিন্তু তার মতো আচরণ করে। যদি, যদিও, যে। যেমন- এত পরিশ্রম
করো না যে স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায়।
খ. অনুসর্গ: তৃতীয়া/পঞ্চমী
- তৃতীয়া- দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক
- পঞ্চমী- হতে, থেকে, চেয়ে
- ওকে দিয়ে কাজটা হবে না কোন ধরণের অব্যয়?
গ. অনন্বয়ী অব্যয়: যে সকল অব্যয় বাক্যে
ব্যবহার হয় বটে কিন্তু বাক্যের সাথে কোনো সম্পর্ক রাখে না।
- হায়! তোমার কী অবস্থা? মরি মরি! প্রভাতের কী সুন্দর রূপ।
ঘ. অনুকার
ক্রিয়াপদ
যে পদ দ্বারা কোন কাজ করা বুঝায় (Not Work) তাকে ক্রিয়া বলে।
ক্রিয়াপদের ২টা চাহিদা আছে
খ. কাল চাহিদা
তুমি দেখ
সে দেখে
ক. উক্ত ক্রিয়া/ অনুহ্য ক্রিয়া/দৃশ্য- আমি ভাত খাই
খ. অনুক্ত ক্রিয়া/ উহ্য ক্রিয়া/অদৃশ্য- আমার নাম জোবায়ের। ‘হ’ এবং ‘আছ’ ধাতু থেকে উৎপন্ন ক্রিয়াগুলো অনুক্ত ক্রিয়া হয়ে থাকে।
উক্ত ক্রিয়া
ক. সমাপিকা ক্রিয়া- যে সমস্ত ক্রিয়া বাক্যের মধ্যে ব্যবহার হয়ে অর্থকে স্পষ্ট
করে। আমি যে তথ্য দিতে চাচ্ছি শ্রোতা তা বুঝতে পারবে।
- আমি ভাত খাই
খ. অসমাপিকা ক্রিয়া- যে সমস্ত ক্রিয়া বাক্যের মধ্যে ব্যবহার হয়ে অর্থকে স্পষ্ট
করে না। আমি যে তথ্য দিতে চাচ্ছি শ্রোতা তা বুঝতে পারবে না।
- আমি ভাত খেয়ে………
সমাপিকা ক্রিয়া- ৪ ভাগে
ক. সকর্ম ক্রিয়া- যার কর্ম আছে সেই সকর্ম। রহিম বই পড়ে
খ. অকর্ম ক্রিয়া- যার কর্ম কখনো ই হয় না সে অকর্ম। সে হাসে………
গ. দ্বিকর্ম ক্রিয়া- যে সমস্ত বাক্যে দুটি কর্ম থাকে তাকে দ্বিকর্ম ক্রিয়া বলে। বাবা আমাকে বই দিলো- কী?/ কাকে?
- বস্তুবাচক যা আছে- বই {মূখ্য কর্ম}
- ব্যক্তিবাচক যা আছে- আমাকে {গৌণ কর্ম}
সংখ্যার ভিত্তিতে ক্রিয়াপদের প্রকারভেদ
- একপদী- আমি ভাত খাই
- দ্বিপদী ক্রিয়া- আমি চলে যাচ্ছি আমার ভাইকে দেখে রেখো {I am going}
- যৌগিক ক্রিয়া- যুক্ত+ইক- আমি চলে যাচ্ছি আমার ভাইকে দেখে রেখো {অসমাপিকা+সমাপিকা}
- মিশ্র ক্রিয়া- এবারের মতো চলে যাচ্ছি আবার দেখা হবে। {বিশেষ্য+ক্রিয়া}
- প্রযোজক ক্রিয়া- যেখানে কর্তা নিজের করে না তাকে অন্য কেউ প্রযোজনা করে। মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন
- নামধাতুজ ক্রিয়া- শিক্ষক ছাত্রকে বেতাচ্ছে {বেত+আ}+চ্ছে