পদাশ্রিত নির্দেশক । পদাশ্রিত নির্দেশক কী? শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর।

 



পদাশ্রিত নির্দেশক । পদাশ্রিত নির্দেশক কী? শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর। 

বাংলায় পদাশ্রিত নির্দেশক মূল শব্দের পরে বসে ঐ শব্দকে নির্দিষ্ট করে দেয়। মূল শব্দের পরে যে অতিরিক্ত অংশ যুক্ত হয়ে শব্দটিকে নির্দিষ্ট করে দিল তাকে পদাশ্রিত নির্দেশক বলে। যেমন-বই+টি= বইটি।

ব্যাখ্যাঃ প্রথমে ‘বই’ শব্দটি দ্বারা যে কোনো বইকে বুঝানো হলেও ‘টি’ যুক্ত হবার পর তা কোনো নির্দিষ্ট বইকেই বুঝানো হয়েছে।

নিয়মাবলীঃ

ক. ‘টা, টি’ দ্বারা নির্দিষ্টতা বুঝালেও একটি ক্ষেত্রে অনির্দিষ্টতা বুঝায়। সংখ্যাবাচক শব্দ ‘এক’ সাথে ‘টি বা টা’ যুক্ত হলে তা নির্দিষ্টতা বুঝাবে না। যেমন- এক+টি= একটি।

খ. ‘গোটা’ বচনবাচক শব্দের আগে বসে নির্দিষ্টতা বুঝাবে কিন্তু খানা, খানি বচনবাচক শব্দের পরে বসে। যেমন- গোটা দুই কমলা দাও। আবার, দুখানা কম্বল চেয়েছিলাম, একখানা বই দাও।

বিঃদ্রঃ- কবিতায় বিশেষ অর্থে ‘খানি’ নির্দিষ্টার্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন- আমি অভাগা এনেছি বহিয়া নয়ন জলে ব্যর্থ সাধনখানি।

গ. কখনো কখনো মূল শব্দের পরে বসে শব্দটিকে নির্দিষ্টও করে না আবার অনির্দিষ্ট করে না তাকে নিরর্থক পদাশ্রিত নির্দেশক বলে। যেমন- সারাটা সকাল বসে আছি। ন্যাকামিটা এখন রাখ।

ঘ. নির্দেশক সর্বনামের পর ‘টা, টি’ যুক্ত হয়ে তা সুনির্দিষ্ট হয়ে যায়। যেমন- ওটি যেন কার তৈরি? এটা নয় ওটা আন। সেইটেই ছিল আমার প্রিয় কলম।

ঙ. কিছু কিছু পদাশ্রিত নির্দেশক আছে যারা তরল জিনিসের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে কখনো নির্দিষ্ট আবার কখনো অনির্দিষ্ট উভয় অর্থেই ব্যবহার হয়।

·         পোয়াটাক দুধ দাও। (অনির্দিষ্টতা)।

·         সবটুকু দুধ ওষুধই খেয়ে ফেলো। (নির্দিষ্টতা)।

চ. বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত পদাশ্রিত নির্দেশক-

পদাশ্রিত নির্দেশক           ক্ষেত্র                                   উদাহরণ

তা                           কাগজ                                 দশ তা কাগজ দাও

কেতা                        জমি                                   দশ কেতা জমি

পাটি                         জোড়া বা জোড়ার একটি              আমার একপাটি জুতো ছিড়ে গেছে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন