ইংরেজি Sound
এর বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে ধ্বনি। যে কোনো ভাষায় উচ্চারিত যে কোনো শব্দকে সাধারণত ধ্বনি
বলা হয়। ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলেছেন “কোন ভাষায় উচ্চারিত শব্দকে
(Word) কে বিশ্লেষণ করলে আমরা কতগুলি ধ্বনি
(Sound) পাই। কিন্তু প্রখ্যাত ধ্বনিতাত্ত্বিক
আব্দুল হাই এ প্রসঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে বলেছেন- “ মানুষের সাথে সামাজিকতা বজায় রাখতে
হলে তার প্রধান উপায় কথা বলা, মুখ খোলা, আওয়াজ করা। সে আওয়াজ বা ধ্বনি গুলোর একমাত্র
শর্ত হচ্ছে তা অর্থবোধক হওয়া চাই।
ভাষার মূল উপাদান ধ্বনি। বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে ভাষার মূল
উপাদান অনুসন্ধান করতে গিয়ে বর্তমান যুগের পণ্ডিতগণ কতগুলো অর্থবোধ ধ্বনি ছাড়া আর কিছুই
পান নি। অর্থ্যাৎ অর্থবোধক ধ্বনিগুলোই মানুষের বিভিন্ন ভাষার বাগধ্বনি। এ কারণে ব্যাকরণে
মানুষের কণ্ঠ নিঃসৃত শব্দকেই ধ্বনি বলে।
প্রকারভেদঃ ধ্বনি সাধারণত ২ প্রকার।
ক. স্বরধ্বনি
খ. ব্যঞ্জনধ্বনি
স্বরধ্বনিঃ যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও কোন প্রকার বাধা পায় না, তাদেরকে বলা হয় স্বরধ্বনি। যেমন- অ, আ, ই, উ। এই স্বরধ্বনি আবার দুই প্রকার (ক) মৌলিক স্বধ্বনি (খ) যৌগিক স্বরধ্বনি
মৌলিক স্বরধ্বনি: যে স্বরধ্বনিসমূহকে উচ্চারণের সময়
আর বিশ্লেষণ করা যায় না তাকে মৌলিক স্বরধ্বনি বলে। বাংলা স্বরধ্বনি সংখ্যা নিয়ে ধ্বনিবিজ্ঞানীগণ
একমত নন। কারো কারো মতে ৭টি, কারো মতে ৮, আবার কেউ বলে ৯টি (পূর্ববঙ্গ) অধিবাসী।
যৌগিক স্বরধ্বনি: পাশাপাশি দুটো স্বরধ্বনি থাকলে দ্রুত
উচ্চারণের সময় তা একটি সংযুক্ত স্বরধ্বনি রূপে উচ্চারিত হয়। এ রূপে এক সঙ্গে উচ্চারিত
দুটো মিলিত স্বরধ্বনিকে যৌগিক স্বরধ্বনি, সন্ধিস্বর, সান্ধ্যক্ষর বা দ্বি-স্বর বলা
হয়। যেমন বই- ব(অ)+ই , বউ- ব(অ)+উ। উদাহরণ
দুটিতে যথাক্রমে অই, অউ পাশাপাশি রয়েছে। বাংলা ভাষায় যৌগিক স্বরধ্বনির সংখ্যা ২৫টি।
কয়েকটি যৌগিক স্বরধবনি- ঐ ঔ
ব্যঞ্জনধ্বনিঃ যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস তাড়িত
বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখ বিবরের কোথাও না কোথাও বাধা পায় কিংবা ঘর্ষণ লাগে, তাদেরকে বলা
হয় ব্যঞ্জনধ্বনি। যেমন- ক, খ, গ। বাংলা ভাষায় ব্যঞ্জন ধ্বনি সংখ্যা ৩৯টি। এই ৩৯টি ধ্বনির
মধ্যে প্রথম ২৫টি ধ্বনিকে (ক-ম) বর্গে বা পর্বে ভাগ করা হয়েছে। যার নাম স্পর্শধ্বনি।
বর্গভুক্ত বলে এদেরকে আবার বর্গীয় ধ্বনি বলে ডাকা হয়। এই ২৫টি ব্যঞ্জনধ্বনিকে উচ্চারণের
স্থান অনুযায়ী ও উচ্চারণে বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন
D”PviY ¯’vb |
D”PviY ¯’vb Abyhvqx bvg |
e¨Äawbi eY©mg~n |
e‡M©i bvg |
wRnŸvg~j ev KÉ |
wRnŸvg~jxq ev KÉg~jxq aŸwb |
K L M N O |
K eM© |
AMÖZvjyRvZ |
AMÖZvjyRvZ
ev Zvje¨ aŸwb |
P
Q R S T |
P
eM© |
cðvr`šÍ g~j |
cðvr`šÍ g~jxq ev g~a©b¨ aŸwb |
U V W X Y |
U eM© |
AMÖ `šÍg~j |
`šÍg~jxq
aŸwb |
Z
_ ` a b |
Z
eM© |
Iô¨ |
Iô¨g~jxq aŸwb |
c d e e k |
c eM© |
দ্রষ্টব্যঃ খণ্ড-ত(ৎ) কে স্বতন্ত্র বর্ণ হিসেবে ধরা হয়
না। এটি ত বর্ণের হস্-চিহ্ন যুক্ত (ত্) এর রূপভেদ মাত্র। ং, ঃ, ঁ এ তিনটি বর্ণ স্বাধীনভাবে
স্বতন্ত্র বর্ণ হিসেবে ব্যবহার হয় না। এ বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনি অন্য ধ্বনির সঙ্গে মিলিত
হয়ে একত্রে উচ্চারিত হয়। তাই এ বর্ণগুলোকে বলা হয় পরাশ্রয়ী বর্ণ। ঙ ঞ ণ ন ম এই পাঁচটি
বর্ণ এবং ং ও ঁ যে বর্ণের সঙ্গে লিখিত হয়ে
সে বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস নিঃসৃত বায়ু মুখবিবর ছাড়াও নাসারন্ধ্র
দিয়ে বের হয়; অর্থ্যাৎ এগুলো উচ্চারণের সময় নাসিকার সাহায্য প্রয়োজন হয়। তাই এগুলোকে
আনুনাসিক বা নাসিক্য ধ্বনি বলে। এর এগুলোর প্রতীক বা বর্ণকে বলা হয় আনুনাসিক বা নাসিক্য
বর্ণ।
অঘোষ ধ্বনিঃ যে ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্র অনুরণিত
হয় না। এ রূপ ধ্বনিকে অঘোষ ধ্বনি বলে। বর্গের প্রথম ও দ্বিতীয় ধ্বনিগুলি অঘোষ। যেমন-
ক খ , চ ছ
ঘোষ ধ্বনিঃ যে ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্র অনুরণিত
হয়। এ রূপ ধ্বনিকে ঘোষ ধ্বনি বলে। যেমন- গ ঘ, জ ঝ
অল্পপ্রাণ ধ্বনি: যে ধ্বনি উচ্চাণের সময় নিঃশ্বাস জোরে
সংযোজিত হয় না। তাকে অল্পপ্রাণ ধ্বনি বলে। প্রতি বর্গের প্রথম ও তৃতীয় ধ্বনি অল্পপ্রাণ
ধ্বনি। যেমন- ক গ
মহাপ্রাণ ধ্বনি: যে ধ্বনি উচ্চাণের সময় নিঃশ্বাস জোরে
সংযোজিত হয়। তাকে মহাপ্রাণ ধ্বনি বলে। প্রতি বর্গের দ্বিতীয় ও চতুর্থ ধ্বনি মহাপ্রাণ
ধ্বনি। যেমন খ ঘ
দ্রষ্ঠব্যঃ বর্গের পঞ্চম ধ্বনিগুলো নাসিক্য আনুনাসিক
ধ্বনি। ঙ ঞ ণ ন ম
উচ্চারণের
স্থান |
অঘোষ |
ঘোষ |
|
||
অল্পপ্রাণ |
মহাপ্রাণ |
অল্পপ্রাণ |
মহাপ্রাণ |
নাসিক্য |
|
কণ্ঠ |
ক |
খ |
গ |
ঘ |
ঙ |
তালু |
চ |
ছ |
জ |
ঝ |
ঞ |
মূর্ধা |
ট |
ঠ |
ড |
ঢ |
ণ |
দন্ত |
ত |
থ |
দ |
ধ |
ন |
ওষ্ঠ |
প |
ফ |
ব |
ভ |
ম |
- অন্তঃস্থ ধ্বনিঃ- য র ল ব
- কম্পনজাত ধ্বনিঃ- র
- পার্শ্বিক ধ্বনিঃ- ল
- উষ্মধ্বনিঃ- শ স ষ হ
- তাড়নজাত ধ্বনিঃ- ড় ঢ়